Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Wednesday, September 17, 2014

রুট কি? কেন রুট করবেন? ? রুট করলে সুবিধা ও অসুবিধা কি? আসুন আজ আমরা তা জেনে নেই


আমরা জানি  যে ইদানিং অ্যান্ড্রয়েড খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর অ্যান্ড্রয়েড এর সাথে আমরা আরও একটা জিনিসের নাম খুব শুনেছি। সেটা হচ্ছে- রুট। যারা নতুন অ্যান্ড্রয়েড ব্যাবহারকারি তাদের মনে প্রায়ই প্রশ্ন আসে যে রুট কি? তাই আজকে আমার এই পোস্ট। এই পোস্টটি পড়ে আপনি রুট সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারনা পাবেন। তাহলে আর দেরি কেন? পড়া শুরু করে দিন! 

অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা প্রায়ই শুনে থাকবেন এই শব্দটি । বিভিন্ন সাইটে এই বিষয়টি নিয়ে অনেক ধরনের ধারনা রয়েছে । তবে আজকে আমার প্রাথমিক ধারনা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি । অনেক অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারীরাই রুট কী এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানেন না । অনেকে মনে করেন রুট করার মাধ্যমে ডিভাইসের পরিপূর্ণ পারফরম্যান্স পাওয়া সম্ভব, আর তাই অনেকেই রুট করতে আগ্রহী হয়ে পড়েন । কিন্তু রুট করার পর দেখা যায় তাদের ডিভাইসের পারফরম্যান্স আগের মতোই রয়ে যায় বা আগের চেয়ে খারাপ হয়ে পরে । তারা হতাশ হয়ে পড়েন এ অবস্থা দেখে । কিন্তু তাদের মাঝে অজানাই থেকে যায় যে রুট করার আসল সার্থকতা কোথায় । আজকের আমি আমার এই লেখার মাধ্যমে আপনাদের সামনে রুট করার কারন , কেন করবেন , রুট করার উপকারিতা এবং অপকারিতা তুলে ধরার চেষ্টা করব । এবং আমার ধারনা আপনাদের মনে রুট কি বিষয়টি নিয়ে আর কোন সন্দেহ মুলক ধারনা থাকবে না ।

রুট ব্যাপারটা আসলে কী

রুট শব্দটি এসেছে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম থেকে । লিনাক্স ব্যবহারকারীদের মধ্যে যাদের রুট প্রিভিলেজ বা সুপারইউজার পারমিশন আছে তাদেরকে রুট ইউজার বলা হয় । সবচেয়ে সহজ শব্দে বলা যায় , রুট হচ্ছে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা প্রশাসক যদিও এর বাংলা অর্থ গাছের শিকড় । রুট হচ্ছে একটি পারমিশন বা অনুমতি । এই অনুমতি থাকলে ব্যবহারকারী তার নিজের ডিভাইসে যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন । উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহারকারী অ্যাডমিনিস্ট্রেটর প্রিভিলেজ ছাড়া সিস্টেম ফাইলগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেননা , লিনাক্সেও তেমনি রুট পারমিশন প্রাপ্ত ইউজার ছাড়া সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাজগুলো করা সম্ভব হয়ে উঠে না । যার লিনাক্স-চালিত কম্পিউটার বা সার্ভারে সব কিছু করার অনুমতি রয়েছে, তাকেই আমরা রুট ইউজার বলে থাকি । অনেক সময় একে আমরা সুপার ইউজার বলেও সম্বোধন করা হয়ে থাকে ।

অ্যান্ড্রয়েড এবং লিনাক্স এর মধ্যে সামঞ্জস্য কোথায় ?

আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে কেন আমি আন্ড্রয়েড নিয়ে কথা বলতে বলতে লিনাক্স এর কথা তুলে নিয়ে আসলাম । আসলে এন্ড্রয়েড তৈরি হয়েছে লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম মুল ভিত্তি থেকে ।

লিনাক্স এ ইউজার পারমিশন আমরা খুব সহজে পেয়ে থাকি কিন্তু আমরা এন্ড্রয়েডে পারি না কেন ?

সাধারনত লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম আমরা ইন্সটল করতে পারি তার তাই আমরা ইউজার পারমিশন কোড আমরা জেনে থাকি । কিন্তু আন্দ্রয়েড মোবাইল আমরা বাজার থেকে ক্রয় করে থাকি এবং তার অপারেটিং সিস্টেম সিস্টেম ইন্সটল ডিভাইস প্রস্তুতকারক করে থাকে । ডিভাইস প্রস্তুতকারক যখন মোবাইলের মধ্যে অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করে তখন তাদের হাতে এই ইউজার পারমিশন কোড থেকে যায় । আর তাই আমাদের হাতে সেই ইউজার পারমিশন থাকে না । এখন আপনার প্রশ্ন আসতে পারে কেন আমাদেরকে এই ইউজার পারমিশন কোড দেওয়া হয় না । আসলে ডিভাইস প্রস্তুতকারক মোবাইলের সুরক্ষা এবং নিরপ্ততার জন্য আমাদেরকে এই কোড দিয়ে থাকে না ।
কিন্তু তাই বলে এই নয় যে আমরা ইউজার পারমিশন কোড পাব না । আমরা ডিভাইস প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে আমরা এই কোড সংগ্রহ করে এন্ডয়েড মোবাইলের ইউজার পারমিশন পেতে পারি । উদাহরণ হিসেবে আমি বলতে চাই সনি , HTC এর মত ব্রান্ড এর মোবাইল যখন ব্যবহার করি তখন আমরা তার ইউজার পারমিশন পাওয়ার জন্য তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে বুটলডার আনলক কোড সংগ্রহ করে থাকি । এই বুটলডার আনলক রুট পারমিশন পাওয়ার একটি অংশ ।

আন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম এক হওয়া সত্ত্বেও ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল ভিন্ন রকম এর কারন কি ?

আপনাদের মনে হয়ত প্রশ্ন জাগতে পারে যে যতগুলো মোবাইল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের সবার ভিন্ন ভিন্ন লুক এর অপারেটিং হয়ে থাকে । অপারেটিং সিস্টেমের মূল ভিত্তিটা এক হলেও একেক কোম্পানি একেকভাবে একে সাজাতে বা কাস্টোমাইজ করতে পারেন । এই জন্যই সনির একটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ইউজার ইন্টারফেসের সঙ্গে এইচটিসির একটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ইন্টারফেসের মধ্যে খুব কমই মিল পাওয়া যায়।

আন্ড্রয়েড মোবাইলে কেন রুট করা থাকে না ?

মোবাইল প্রস্তুত কারক প্রতিষ্ঠান যখন তাদের মোবাইল গুলো বাজারজাত করে তখন মোবাইল গুলোতে রুট পারমিশন দেওয়া হয় না । কারন হল রুট পারমিট করা থাকলে আপনি তখন আপনার মোবাইলে যে কোন কিছু করতে পারবেন । আপনি মোবাইলের রুট ফোল্ডাররে যেতে পারবেন ( মোবাইলের অপারেটিং সিস্টেম ফোল্ডার ) ।  আপনি যে কোন ফাইল ডিলিট , এডিট করতে পারবেন । আপনার মোবাইলে যখন রুট পারমিট করা থাকবে তখন আপনি কোন ফাইল ডিলিট বা সরিয়ে নিলে আপনাকে কোন ওয়ার্নিং দিবে না । আপনি হয়ত মনে করছেন এই ফাইল গুলো আপনার কোন প্রয়োজনে আসবে না আর তাই আপনি ফাইল গুলো ডিলিট করে দিয়েছেন । হয়তো আপনি কাস্টমাইজ করতে গিয়ে বা রম ইন্সটল করতে গিয়ে ভুল করে ফোন ব্রিক করে ফেলেছেন । এতে কিছুক্ষণ পর দেখতে পারলেন যে আপনার মোবাইল আর চালু হচ্ছে না । আপনি তখন আপনার মোবাইল প্রস্তুত কারকে দোষারোপ করতে থাকবেন । যদি রুট না থাকতো তাহলে আপনি ফাইল গুলো ডিলিট এডিট তো দুরের কথা আপনি আই ফোল্ডারটি খুজে পেতেন না । ফোন প্রস্তুতকারক আপনাকে অনেক সুযোগ সুবিধা দিলেও এই সব পারমিশন তারা তাদের সুবিধার্থে দেয় না । এটা করা হয় আপনার ভালোর জন্যই ।

কেন আপনি আপনার আন্ড্রয়েড ডিভাইসটি রুট করবেন?

আপনি তখনি রুট করার চিন্তা করবেন যখন আপনার মোবাইলে সব ধরনের সুযোগ ব্যবহার করতে পারছেন না , আপনার মোবাইল আপনাকে কোন সীমার মধ্যে বেধে রেখেছে । যারা একদমই নতুন এই বিষয় ভালভাবে কিছু জানেন না তারা তাদের মোবাইল রুট করার চিন্তা  কিছুদিন পর করার সিদ্ধান্ত নিবেন । তার কারন আপনি আগে ভাল করে বুঝে নিন কেন আপনি রুট করবেন , এবং রুট করার পর আসলেই আপনার উপকার হবে কি না । অনেকে না বুঝে রুট করে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে । তাই আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলছি সাবধানতার মাধ্যমে আপনি আপনার মোবাইল রুট করুন ।
আমরা আসলে অনেক কারনে আন্ড্রয়েড মোবাইল রুট করে থাকি । বর্তমানে কিছু কিছু অ্যাপ্লিকেশান এখন বের হয়েছে যা ব্যবহার করতে রুট পারমিটের প্রয়োজন হয়ে পড়ে । কেউ কেউ ওভারক্লকিং করার মাধ্যমে মোবাইলের স্পীড বাড়ানোর জন্য রুট করে থাকেন । কেউ ডেভেলপারদের তৈরি ভিন্ন ভিন্ন সাধের কাস্টম রম ব্যবহার করার জন্য , কেউ গেম খেলার জন্য । আরও অনেক কারন আছে যেই কারনে রুট করা হয়ে থাকে । এই কারন গুলো থেকে থাকলে রুট করা আমি মনে করি ভাল । কিন্তু অকারন অবশত রুট করে বিপদে পড়ার কোন প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করছি না ।

রুট করার কিছু সুবিধা  —

বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে মোবাইলের অব্যবহৃত ফাইল, টেমপোরারি ফাইল ইত্যাদি নিয়মিত মুছে ফোনের গতি ঠিক রাখা । এছাড়াও মোবাইলের পারফরমেন্স বাড়ানো যায় বলে আর অনেক ভাবে । ওভারক্লকিং করা সিপিইউ স্পিড স্বাভাবিক অবস্থায় যতটা থাকে তারচেয়ে বেশি দ্রুত কাজ করে । এর মাধ্যমে কোনো বিশেষ কাজে প্রসেসরের গতি বাড়ানোর প্রয়োজন পড়লে তা করা যায় । যখন মোবাইল এমনিতেই পড়ে থাকে, তখন সিপিইউ যেন অযথা কাজ না করে যে জন্য এর কাজের ক্ষমতা কমিয়ে আনা যায় আন্ডারক্লকিং করে । এতে করে ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়ানো সম্ভব । এছাড়াও রুট করে কাস্টম রম ইন্সটল করার সুবিধা রয়েছে । অনেক ডেভেলপার বিভিন্ন জনপ্রিয় মোবাইলের জন্য কাস্টম রম তৈরি করে থাকেন । এসব রম ইন্সটল করে আপনি আপনার মোবাইলকে সম্পূর্ণ নতুন একটি সেটের রূপ দিতে পারবেন । আপনি সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনার রাম এর স্পীড বাড়াতে পারবেন , প্রসেসরের স্পীড বাড়াতে পারবেন তবে কোন হার্ডওয়্যার বা অন্যান্য কোন কিছু বাড়াতে পারবেন না । আপনি ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরাকে ১৬ মেগাপিক্সেল করতে পারবেন না । যেই মোবাইলে NFC নেই তাতে তা সংযোগ করতে পারবেন না । রুট শুধু মাত্র আপনার অভ্যন্তরীণ পারফরম্যান্সে কাজে আসবে , বাহ্যিক কোন পরিবর্তন নয় ।

রুট করার কিছু অসুবিধা রয়েছে  —

সর্ব প্রথম মোবাইল রুট করার মাধ্যমে আপনার ওয়ারেন্টি বাতিল হয়ে যাবে । তাই রুট করার আগে সাবধান । অবশ্য অনেক মোবাইল আবার আনরুট করা যায় । আর মোবাইল আনরুট করা হলে তা সার্ভিস সেন্টারে থাকা টেকনিশিয়ানরা অনেক সময়ই ধরতে পারেন না যে সেটটি রুট করা হয়েছিল কি না । তবে কাস্টম রম থাকলে ধরা খাওয়া বাধ্যতামূলক । অনেকে মোবাইল ব্রিক নিয়ে অনেক কথাই বলেছে। এখন কথা হল ব্রিক মানে কি ? ব্রিক অর্থ ইট । আর ফোন ব্রিক মানে আপনার ডিভাইসকে ইটে রূপান্তরিত করা বা নষ্ট হয়ে যাওয়া । অর্থাৎ আপনার মোবাইল কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে । রুট করা ও এর পরবর্তী বিভিন্ন কাজের সময় যদি কোন ভুল ত্রুটি হয় তাহলে ফোনে স্থায়ী বা অস্থায়ী সমস্যা হতে পারে । প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফোনটি আনরুট অবস্থায় দেন যাতে আপনার মোবাইলের কোন ক্ষতি না হয় । রুট করার মাধ্যমে আপনি সেই নিশ্চয়তা ভেঙ্গে ফেলছেন । এখন এর সম্পূর্ণ দায়ভার আপনাকে গ্রহন করতে হবে । রুট করলে দেখা যায় অনেক সময় অনেক ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম রুট করা ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে । কিন্তু লক থাকা অবস্থায় ব্যবহারকারী নিজেই রুট অ্যাক্সেস পান না , তাই অন্য প্রোগ্রামগুলোর রুট অ্যাক্সেস পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে

Post Top Ad

Your Ad Spot

প্রয়োজনীয়